2016-যশোর বোর্ড-সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

সৃজনশীল প্রশ্ন ৬। মিঃ ’ক’ একজন ব্যবস্থাপক।তিনি যে অফিসে চাকুরি করেন যেখানে কর্মচারীর সংখ্যা কযেক হাজার।অফিসের কর্মচারীদের হাজিরা নেওয়ার জন্য তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা নিলেন।তিনি পর্যায়ক্রমে কর্মচারীদের কৃত্রিম পরিবেশে বিশেষ পোশাক পরিধান করে গাড়ি চালনা প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা নিয়েছেন।

ক)ন্যানো টেকনোলজি কাকে বলে ?

খ)”টেলিমেডিসিন এক ধরনের সেবা”-বুঝিয়ে লেখ।

গ)উদ্দীপকে কর্মচারীদের প্রশিক্ষনে ব্যবহৃত প্রযুক্তি ব্যাখা কর।

ঘ)উদ্দীপকে বর্ণিত মিঃ “ক” এর প্রযুক্তি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কতটুকু গুরত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে?তোমার মতামতের স্বপক্ষে যুক্তিসহ বিশ্লেষন কর।

৬ নং সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর:

ক)ন্যানো টেকনোলজি কাকে বলে ?

উত্তর ক): ন্যানো টেকনোলজি হলো এমন একটি প্রযুক্তি যেখােনে অণু পরমাণুর স্কেলে অর্থাৎ স্কেলে একটি বস্তুকে নিপুণভাবে ব্যবহার করা যায় অর্থাৎ এর পরিবর্তন,পরিবর্ধন,ধ্বংস বা সৃষ্টি করা যায়।

খ)”টেলিমেডিসিন এক ধরনের সেবা”-বুঝিয়ে লেখ।

উত্তর খ): টেলিমেডিসিন হলো এমন একটি চিকিৎসা সেবা যা তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে যেকোন অবস্থান থেকে দেশ-বিদেশের বিশেষঙ্গ ডাক্তারের চিকিৎসাসেবা গ্রহন করা যায়।তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সাহায্যে যে কোন ভৌগোলিক দূরত্বে অবস্থানরত রোগীকে বিশেষঙ্গ চিকিৎসকের স্বাস্থ সেবা দেওয়াকে টেলিমেডিসিন বলে।টেলিমেডিসিন হলো এমন একটি চিকিৎসাসেবা প্রযুক্তি যার মাধ্যমে এক দেশে অবস্থান করে অন্য দেশের বিশেষঙ্গ ডাক্তারের চিকিৎসাসেবা গ্রহন করা যায়।

সাধারণত প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল যেখানে সহজে যাতায়াত করা যায় না,যেসব এলাকায় বিশেষঙ্গ চিকিৎসা সেবা পাওয়া যায় না।সেসব এলাকায় ইন্টারনেট প্রযুক্তির সহায়তায় স্কাইপি ,মেসেন্জার প্রভৃতি ভিডিও এ্যাপ্লিকেশন ব্যাবহার করে ভিডিও কনফারেন্স এর মাধ্যমে ডাক্তার রোগীর সাথে কথা বলে পরামর্শ দিতে পারেন।এতে সহজেই বিশেষঙ্গ চিকিৎসকের সেবা নিয়ে উপকৃত হওয়া যায়।তাই এই টেলিমেডিসিনকে এক ধরনের সেবাই বলা যায় ।

গ)উদ্দীপকে কর্মচারীদের প্রশিক্ষনে ব্যবহৃত প্রযুক্তি ব্যাখা কর।

উত্তর গ): উদ্দীপকের কর্মচারীদের প্রশিক্ষনে ব্যবহৃত প্রযুক্তিটি হলো ভার্চুয়াল রিয়েলিটি।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হলো সেই প্রযুক্তি যা ত্রিমাত্রিক বিশ্ব সৃষ্টি করে এবং দৃশ্যমানতা বাহক জীবন্ত।প্রকৃত অর্থে বাস্তব নয় কিন্তু বাস্তবের চেতনা উদ্যেগকারী যোগান নির্ভর কল্পনাকে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বা অনুভবে বাস্তবতা বলে।ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে ত্রিমাত্রিক চিত্রভিত্তিক ছবি ব্যাবহার করা হয় ।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হচ্ছে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত সিস্টেম ,যাতে মডেলিং ও অনুকরণবিদ্যার প্রয়োগের মাধ্যমে মানুষ কৃত্রিম ত্রিমাত্রিক উন্দ্রিয়গ্রাহ্য পরিবেশের সাথে সংযোগ স্থাপন বা উপলব্ধি করতে পারে।এই প্রযুক্তিতে ব্যাবহারকারী সম্পূর্ণরূপে একটি কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে নিমজ্জিত হয়ে যায় ।একটি শক্তিশালী কম্পিউটারে সংবেদনশীল গ্রাফিক্স তৈরীর মাধ্যমে বাস্তবের ত্রিমাত্রিক অবস্থা পর্দায় তৈরী করলেই ভার্চুয়াল রিয়েলিটি জগতে প্রবেশ করা হয়।এখানে দর্শক যা দেখে তা বাস্তবের কাছাকাছি এনে বোঝার জন্য বিশেষভাবে তৈরী চশমা বা গ্লোভস ব্যাবহার করা হয়।কম্পিউটিার সিম্যুলেশনের মাধ্যমে ড্রাইভিং প্রশিক্ষনের জন্য চালককে একটি নির্দিষ্ট আসনে বসতে হয় ।চালকের মাথায় পরিহিত হেড মাউমেন্ট ডিস্পেলের সাহায্যে কম্পিউটার দ্বারা সৃষ্ট যানবাহনের অভ্যন্তরীণ অংশ এবং আশেপাশের রাস্তার পরিবেশের একটি মডেল দেখানো হয়।এর সংগে যুক্ত থাকে একটি হেড ট্যাকিং সিস্টেম।ফলে ব্যবহারকারী যানবাহনের অভ্যন্তরীন ও বাহ্যিক অংশের ৩৬০ ডিগ্রীর দর্শন লাভ করেন এবং কম্পিউটার সৃষ্ট পরিবেশে মগ্ন থাকেন।এতে অল্প সময়ে ড্রাইভিং প্রশিক্ষনে ভাল ফল পাওয়া যায়।

উদ্দীপকে মি. ’ক’ কর্মচারীদের কৃত্রিম পরিবেশে বিশেষ পোশাক পরিধান করে গাড়ি চালনা প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা নিয়েছেন যা ভার্চুয়াল রিয়েলিটির আওতাভুক্ত।কারণ ,এখানে বাস্তব পরিবেশক এক বিশেষ প্রক্রিয়ায় কৃত্রিম পরিবেশে রূপান্তর করা হয় যা দেখে দর্শক ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে প্রবেশ করতে পারে।

উপরের আলোচনা থেকে বলা যায়,উদ্দীপকের মি.’ক’ এর ব্যবহৃত প্রযুক্তিটি হলো ভার্চুয়াল রিয়েলিটি।

ঘ)উদ্দীপকে বর্ণিত মিঃ “ক” এর প্রযুক্তি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কতটুকু গুরত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে?তোমার মতামতের স্বপক্ষে যুক্তিসহ বিশ্লেষন কর।

উত্তর ঘ): উদ্দীপকে বায়োমেট্রিক্স প্রযুক্তি ফিংগার প্রিন্ট পদ্ধতি বা আঙ্গুলের চাপ ব্যাবহার করেছেন যা তার অফিসের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে গুরত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে।

উদ্দীপকে বর্ণিত মি. ’ক’ এর প্রতিষ্ঠানে কর্মচারীদের প্রবেশের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত প্রযুক্তিটি হলো ফিংগার প্রিন্ট পদ্ধতি বা আঙ্গুলের ছাপ। ফিংগারপ্রিন্ট পদ্ধতিতে বায়োমেট্রিক্স ডিভাইস ব্যবহার করে আঙ্গুলের ছাপের সাহায্যে একজন মানুষকে সহজে সনাক্ত করা যায়।একজন মানুষের আঙ্গুলের চাপ ।অন্য মানুষের তুলনায় সম্পূর্ণ আলাদা ।ফিংগারপ্রিন্ট রিডার হচ্ছে এক ধরনের বায়োমেট্রিক ডিভাইস যার সাহায্যে আঙ্গুলের ছাপ ইনপুট হিসাবে গ্রহন করে কম্পিউটারের সফটওয়্যারে মাধ্যমে পূর্বে থেকে সংরক্ষিত ছাপের সাথে মিলিয়ে পরীক্ষা করা হয় ।

উদ্দীপকের মি. ’ক’ এ প্রযুক্তি ব্যাবহার করে তার প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের হাজিরা নেওয়ার কাজটি করেন।কর্মচারীরা অফিসে প্রবেশ করার সময় তাদের প্রত্যেকের আঙ্গুলের ছাপ ফিংগার প্রিন্ট রিডার এ নেওয়া হয়েএতে একজনের আঙ্গুলের ছাপ ।অন্যজন দিতে পারে না। ফলে কেউ যদি অনুপস্থিত থেকে অন্যজনের মাধ্যমে হাজিরা দিতে চায় তবে তা এ বায়োসেট্রিক্স পদ্ধতিতে সম্ভব না।

তাছাড়া এ পদ্ধতিতে সময় নিজ হাতে লিখতে হয় না। অটোমেটিক পদ্ধতিতে কম্পিউটারে উঠে যায়।ফলে কেউ ইচ্ছে করে সময় আগ-পিছ করে লিখতে পারে না। তাই এক্ষেত্রে অসাদুপায় অবলম্বন করা সম্ভব না। এই সবদিক থেকে বিবেচনা করে এটির নিরাপত্তা অনেক বেশিই বলা যায়।

অতএব, উপরের আলোচনা থেকে দেখা যায় যে, উদ্দীপকের বর্ণিত মি. ‘ক’ এর বায়োমেট্রিক্স প্রযুক্তি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে গুরত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে।

Previous article2016-চট্রগ্রাম বোর্ড-সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
Next article2016-সিলেট বোর্ড-সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর